ঈমানের দাবি
আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ-দিবসের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন উত্তম কথা বলে, নয়তো চুপ থাকে।
যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং আখিরাতের দৃঢ় বিশ্বাস করে, সে যেন প্রতিবেশীকে সম্মান করে।
আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের উপর ঈমান রাখে, সে যেন মেহমানকে সম্মান করে।
[ বুখারী, হাদীস নং ৬৪৭৫ ]
সালাফের দরসে
❒ মুজাহিদ রহিমাহুল্লাহ বলেন, কিছু মানুষ যখন কোনো মজলিসে বসে এবং আল্লাহর আলোচনা না করেই মজলিস থেকে ওঠা যায়, তখন সেখান থেকে লাশের গন্ধের চেয়েও নিকৃষ্ট দুর্গন্ধ বের হতে থাকে; এ মজলিস একদিন তাদের উদাসীনতার সাক্ষ্য দিবে। পক্ষান্তরে যখন কিছু মানুষ সমবেত হয় এবং তারা পরস্পর আলাদা হওয়ার পূর্বেই আল্লাহর আলোচনা করে, তখন সেখান থেকে মিশকের সুঘ্রানের চেয়েও উত্তম সুগন্ধি ছড়াতে থাকে। তাদের এ বৈঠকও একদিন তাদের যিকরের সাক্ষ্য দেবে।
❒ কোনো এক সালাফ বলেন, কিয়ামতের দিন আদম-সন্তানের সামনে তার জীবনের প্রতি মূহুর্তের হিসাব তুলে ধরা হবে। যে সময়গুলো সে আল্লাহর স্মরণ ছাড়া কাটিয়েছে, সেগুলোর জন্য অনুশোচনায় তার বুক ফেটে চৌচির হয়ে যাবে।
❒ ইবরাহীম নাখই রহিমাহুল্লাহ বলেন, আধিক সম্পদ ও অতিরিক্ত কথার মাধ্যমে মানুষের ধ্বংস হয়।
❒ মুহাম্মদ ইবনে আজালান রহিমাহুল্লাহ বলেন, কথা মূলত চার প্রকারঃ
১. আল্লাহর যিকর
2. কুরআন তিলওয়াত
3.কেউ কোনো ইলম জানতে চাইলে তা জানানো
4. প্রয়োজনীয় দুনিয়াবি কথা।
❒ এক ব্যক্তি সালমান ফারিসি রহিমাহুল্লাহ এর কাছে আবেদন করলেন, আমাকে নসিহত করুন। তিনি বললেন, ' কথা বোলো না'। লোকটি বলল, সমাজে বাস করে কেউ কি কথা না বলে থাকতে পারে? তিনি উত্তর দিলেন, ' যদি কথা বলতেই হয়, তা হলে সঠিক কথা বোলো নয়তো চুপ থাকো।'
❒ আবূ বকর সীদ্দিক রহিমাহুল্লাহ নিজ জিহবা টেনে ধরে বলতেন, এটাই আমাকে নিচে নামিয়েছে!
❒ ইবনু মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বলেন, শপথ আল্লাহর, যিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই! দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে রাখার মতো জিহবার চেয়ে উপযুক্ত পৃথিবীতে আর কিছু নেই।
❒ ওয়াহহাব ইবনু মুনাব্বিহ রহিমাহুল্লাহ বলেন, বিদ্বানগন এ বিষয়ে একমত যে, সর্বোৎকৃষ্ট প্রজ্ঞা হলো চুপ থাকা।
❒ শুমাইত ইবনু আজালান রহিমাহুল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান! যতক্ষণ চুপ থাকবে, ততক্ষণ তুমি নিরাপদ। কথা যদি বলতেই হয়, সতর্কতার সাথে বলো। হয়তো কথা তোমার পক্ষে যাবে , না হয় বিপক্ষে।
❒ ফুযাইল ইবনু ইয়াজ রহিমাহুল্লাহ বলেন, হাজ্জ, সীমান্ত প্রহরা কিংবা জিহাদের চেয়েও জিহবা নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত কঠিন।
❒ তৎকালীন সময়ে মিশরের বিশিষ্ট ফকিহ ও প্রাজ্ঞ আলিম উবাইদুল্লাহ ইবনু আবূ জাফর রহিমাহুল্লাহ বলেন, কেউ যখন কথা বলে এবং তার কথাবার্তা আকে মুগ্ধ করে, তখন সে যেন চুপ্প থাকে। অপরদিকে কেউ যখন চুপ থাকে এবং এই নীরবতা তাকে তৃপ্ত করে, তখন সে যেন কথা বলতে শুরু করে।
[ নবিজির পরশে সালাফের দরসে, পৃষ্ঠা নং ৪৯-৫১ ]